পৃথিবীতে খুব কম মানুষই আছে যারা বঙ্গবন্ধুকে চেনে না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে বাঙালি জাতির জনক হিসেবে পরিচিত। তিনি ছিলেন অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী। তার প্রতিটি কথা এবং তার প্রতিটি কাজ বাঙালি জাতির জন্য অবিস্মরণীয়। যতদিন বাঙালি জাতি থাকবে ততদিন তাকে শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করবে। কেননা তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শেষ করা যাবে না। তিনি হলেন বর্তমানের ছেলেমেয়েদের আদর্শ।
আজকের এই পোস্টে আমরা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অসাধারন কিছু কবিতা তুলে ধরব। বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে যতই বলব ততই কম হবে। তিনি ছিলেন প্রকৃত নেতা। অসংখ্য নেতা-কর্মী আসবে যাবে কিন্তু তার মত হবে না। কেননা তিনি সাধারণ মানুষের জন্য ভাবতেন নিজের জন্য না। কেননা বর্তমানে নেতাকর্মীরা শুধু নিজের সুখ শান্তির কথা ভাবে। সাধারণ মানুষের কথা ভাবে না। চলুন এবার জেনে নেয়া যাক সেই মহান নেতাকে নিয়ে কিছু কবিতা।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা
‘দিকে দিকে আজ অশ্রম্নুগঙ্গা
রক্তগঙ্গা বহমান
নাই নাই ভয় হবে হবে জয়
জয় মুজিবুর রহমান।’
( অন্নদাশঙ্কর রায় )
“সমবেত সকলের মতো আমিও গোলাপ ফুল খুব ভালোবাসি,
রেসকোর্স পার হয়ে যেতে সেইসব গোলাপের একটি গোলাপ
গতকাল আমাকে বলেছে,
আমি যেন কবিতায় শেখ মুজিবের কথা বলি।
আমি কিংবদন্তির কথা বলছি
আমি আমার পূর্বপুরুষের কথা বলছি।
তিনি স্বপ্নের মত সত্য ভাষণের কথা বলতেন
সুপ্রাচীন সংগীতের আশ্চর্য ব্যাপ্তির কথা বলতেন
তিনি কবি এবং কবিতার কথা বলতেন।
মুজিব নামেই হৃদয় মাঝে ভেসে আসে সুর
সকল দেশের সেরা বলে লাগে সুমধুর।
অত্যাচারী হানাদারের করতে পরাজয়
মুজিব নামেই বুকের ভেতর রক্তধারা বয়।
মুজিব নামেই বিশ্ব মাঝে বীরের পরিচয়
রক্ত দিয়ে আদায় করে বাংলাদেশের জয়।
শোধ হবে না কোনোদিনও তাঁর ত্যাগেরই দাম
মুজিব নামেই মিশে আছে বাংলাদেশের নাম। ( কাঞ্চন )
মুজিব স্মৃতি সজিব অতি
মনে রেখো ভাই,
মুছতে পারে এমন স্মৃতি
সাধ্য কারো নাই।
মুজিব বাংলার স্বাধীনতা
সব বাঙালির মিতা
মুজিব সবার আপনজন
মুজিব জাতির পিতা।
মুজিব বাংলার স্বপন গাঁথা
মুজিব বাংলার প্রাণ
মুজিব হল সোনার বাংলার
সোঁদা মাটির ঘ্রাণ।
মুজিব বাংলার শ্রেষ্ট সন্তান
টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম ।
যার জন্য এই বাংলার মাটি
হয়েছে আজ ধন্য ।
নেতা নয়কো
মহান নেতা
এই বাংলার
জাতির পিতা ।
বাঙ্গালীদের জাগায় সাহস ,
জাগায় মনে শক্তি ।
মুজিব তুমি জাতির পিতা
রইলো শ্রদ্ধা ভক্তি ।
বিশ্বের একজন বাঙালি শ্রেষ্ঠ
শেখ মুজিবুর রহমান
পরাধীন বাংলাকে স্বাধীন করে
নিয়েছ সবার ওপরে স্থান।
তুমি আছ বাঙালির অন্তরে
আছ প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাসে
মিশে আছ বাঙালির সত্তায়
থাকবে গৌরবে-গর্বে-বিশ্বাসে।
তুমি ইতিহাস, তুমি বাংলার ঐতিহ্য
তুমি বাংলার গৌরব, বাঙালির গর্ব
তোমার জন্য পেয়েছি আমরা
এই পৃথিবীতে বাংলা নামক স্বর্গ।
পৃথিবী নামক পুষ্পকাননে
তুমি ছিলে এক প্রস্ফুটিত ফুল
ঘাতকেরা তোমায় হত্যা করে
করেছিল এক চরম ভুল।
মরেও অমর তুমি ধরণির বুকে
তোমার কীর্তি রবে সবার মুখে মুখে
তুমি ছিলে তুমি আছ তুমি থাকবে ( প্রবীর রায় )
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা আবৃত্তি
হে মুজিব,
কে বলেছে তুমি মৃত
কে বলেছে তুমি নাই?
আমি ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল জুড়ে
তোমায় খুঁজে পাই।
তুমি দিয়েছ নতুন প্রাণ,
করেছ মোদের মুক্তি;
তোমার উঁচু ধ্বনিতে আজও
খুঁজে পাই শুভ শক্তি!
তুমি বিনে স্বাধীনতা?
এ তো কেবলই শুধু এক শব্দ!
তোমার কণ্ঠের আওয়াজেই তো আজ
শত্রু হয়েছে জব্দ!
তোমায় পেয়ে বাংলার মাটি বাংলার জল
বাংলা পেয়েছে প্রাণ! ( রাফসান )
চোখের কালিতে মনের খাতায়
লিখে দিলাম একটি নাম
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমান।
আকাশের নীলে সাগরের জলে
এঁকে দিলাম একটি নাম
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমান।
ফুল পাখিদের কলগানে
কাননে মধূপ গুঞ্জরণে
গেয়ে যায় একটি নাম
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমান। ( নিতাই পদ বণিক )
শোক দিবসের কবিতা
বঙ্গবন্ধুর ছড়া লিখতে
ইতিহাসের পাতায় টিকতে
যেই দিয়েছি হাত,
তার কাহিনী অশ্রু ঝরায়
রাতের পরে রাত ।
আমার সাথে রাতের তারা
বন-বনানীর নিঝুম পাড়া
সবাই দিলো যোগ,
বঙ্গবন্ধুর চলে যাওয়ায়
সবার মনে শোক।
মুক্তিযুদ্ধ- স্বাধীন বাংলা
বীর বাঙালির আত্মার সুর
বাংলাদেশের প্রাণে-প্রান্তরে
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
কে জ্বেলেছে লক্ষ প্রাণে
স্বদেশ প্রেমের আগুন
কে এনেছে বাংলাদেশে
স্বাধীনতার ফাগুন!
ছিলেন তিনি প্রাণবাজির এক গায়ক
চাইলে তাঁকে খুব নিকটেই পাবে
জীবন-নদীর বাঁকে
টুঙ্গিপাড়া কিংবা অজগাঁয়ে
শহরেও আছেন তিনি পালতোলা এক নায়ে
শোনো, উদাস মাঝি কী নামে আজ হাঁকে!
নীল আকাশের তারা হয়ে তুমি
সবার হৃদয়ে ফুটবে,
তোমার নামেই মানুষ ঘুমাবে
তোমার নামেই উঠবে।
১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা
১৫ ই আগস্টে ঘাতকের বুলেটের আঘাতে
হয়ত ছিন্নভিন্ন হয়েছিলো বঙ্গবন্ধুর দেহখানি,
কিছু হিংস্র হায়নার দল ছিন্নভিন্ন বুকের রক্তপানে
মেতে উঠেছিলো পৈশাচিক বর্বরতায়,
তারা চেয়েছিলো বাংলার বুক হতে নিভিয়ে দিতে
মুজিব নামের চিরমঙ্গল প্রদীপখানি
তবে তারা ভূলে গিয়েছিলো বাংলার ঘরে ঘরে থাকে মুজিব,
মুজিবের হার না মানার চেতনা বুকে নিয়েই
একদিন পেয়েছিলো স্বাধীনতার দেখা,
সে মুজিবীয় চেতনা যে কখনও কোনো অস্ত্রের আঘাতে মুছে যাবার নয়,
তাইতো সে আজো বেঁচে আছে
কবির কবিতায়, গায়কের গানে, ইতিহাসের পাতায়, বাঙালির প্রাণে,
তাকে আজো দেখা যায়,
রেসকোর্সের ময়দানে কিংবা উত্তাল রাজপথে,
বাংলার মাঠঘাট কিংবা শিল্পীর তুলিতে,
সে যে বাংলার চিরজাগ্রত সূর্য,
তার আলোতেই পথচলে শত কোটি বাঙালি,
তিনি আছেন বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে,
তিনি বেঁচে রইবেন চিরকাল বাঙালির অন্তরের বন্দরে।
আমরা শোকাহত,
হে মুজিব তোমার জন্য শোকাহত
তুমি ছিলে স্বাধীন বাংলার উদ্দীপ্ত সূর্য।
তুমি ছিলে হাজার বাঙালির শ্রেষ্ঠ নেতা,
তুমি ছিলে বাংলা মায়ের বুক ভরা হা হা কারের একমাত্র শান্তনাদাতা।
তোমার জন্য সারা বাংলা শোকাহত,
মুজিব তোমার জন্য বিশ্ব শোকাহত।
হে মুজিব তুমি রবে মোর মনে,
তুমি রবে অনাগত শিশুর হৃদয় জুড়ে।
আজ লাল সবুজের উরন্ত পতাকা তোমার রেখে যাওয়া অবদান,
বাংলার মানুষ হাজার বছরেও ভুলবেনা তোমার এই ঋণ
তুমি ছিলে ৬ দফা আন্দোলনের পথ,
করেছিলে ৭কোটি বাঙালির মুক্তির শপথ।
কোথায় পাবো
তোমারে মুজিব। ( সাদিয়া সাদি )
১৫ আগস্টের কবিতা
এখনও রক্তের রঙ ভোরের আকাশে।
পৃথিবীও বিশাল পাখায় গাঢ় রক্ত মেখে
কবে থেকে ভাসছে বাতাসে।
অপেক্ষায়- শব্দের- শব্দেই হবে সে মুখর- আরো একবার
জয় বাংলা ধ্বনি লয়ে যখন সূর্যের আলো তার
পাখায় পড়বে এসে
ইতিহাস থেকে আরো কিছুক্ষণ পরে।
মানুষ তো ভয় পায় বাক্হীন মৃত্যুকেই,
তাই ওঠে নড়ে
থেকে থেকে গাছের সবুজ ডাল পাতার ভেতরে।
পাতাগুলো হাওয়া পায়,
শব্দ করে ওঠে আর খাতার পাতাও
ধরে ওঠে অস্থিরতা- কখন সে পাবে স্বর—
জয় বাংলা ঝড়- তাকে দাও
জন্মনাভি! বোঁটা থেকে দ্যাখো আজও
অভিভূত রক্ত যায় ঝরে
বাঙালির কলমের নিবের ভেতরে।
স্তব্ধ নয় ইতিহাস! বাংলাও সুদূরগামী
তেরোশত নদীর ওপরে ওই আজও তো নৌকোয়
রক্তমাখা জনকের উত্থান বিস্ময়!