ক্রোয়েশিয়া কাজের ভিসা, ভিসার দাম ও বেতন কত

ইউরোপের সৌন্দর্যমন্ডিত উন্নত দেশগুলোর মধ্যে ক্রোয়েশিয়ার অন্যতম। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে পড়াশোনার জন্য, ভ্রমণের জন্য, চিকিৎসা সেবার জন্য ও কাজের ভিসা নিয়ে ক্রোয়েশিয়া গিয়ে থাকে। ক্রোয়েশিয়া প্রায় সব দিক থেকে উন্নত একটি দেশ। ক্রোয়েশিয়া প্রতিবছর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে থাকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায়।

বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসাতে অনেক শ্রমিক ক্রোয়েশিয়া যাচ্ছে। ক্রোয়েশিয়া উন্নত দেশ হয় এখানে সুযোগ সুবিধা ও কাজের বেতন ভালো থাকে। যার কারণে বেশিরভাগ মানুষ কাজের ভিসা নিয়ে ক্রোয়েশিয়া যাওয়ার জন্য আগ্রহী। আবার অনেকেই উচ্চতর ডিগ্রী অর্জনের জন্য ক্রোয়েশিয়া যায়।

আমি আজকের এই পোস্টে ক্রোয়েশিয়া বিভিন্ন ভিসার দাম কত, ক্রোয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে, ক্রোয়েশিয়া বেতনের পরিমাণ কেমন, ক্রোয়েশিয়া মেডিকেল ভিসার দাম কত, ক্রোয়েশিয়ার ভিসা আবেদনের নিয়ম ও ভিসা আবেদনের জন্য কি কি প্রয়োজন সবকিছু বিস্তারিত আজকের এই পোস্টে তুলে ধরব। চলুন নিচে থেকে দেখে নিয়ে যাক।

ক্রোয়েশিয়া ভিসার দাম কত

ক্রোয়েশিয়া ভিসার দাম নির্ভর করে ভিসা ক্যাটাগরির উপর। যেমনঃ যদি আপনি ভিজিট ভিসায় ক্রোয়েশিয়া যেতে চান তাহলে ভিসা বের করতে আপনার খরচ পড়বে ৩৬০০০ টাকা। আর বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক খরচ মিলিয়ে আপনার খরচ হবে ২ লক্ষ টাকার মত। আবার যদি আপনি স্টুডেন্ট ভিসা বের করতে চান তাহলে আপনার খরচ হবে ২৫০০০ টাকা।

আর স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে ক্রোয়েশিয়া যেতে আপনার খরচ হবে সবমিলিয়ে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার থেকে ৪ লক্ষ টাকা। আর আমাদের দেশের সাধারণত সব মিলিয়ে খরচের হিসাবটা করা হয়। আবার আপনি যদি কাজের ভিসা নিয়ে ক্রোয়েশিয়া যেতে চান তাহলে শুধুমাত্র আপনার ভিসা বের করতে খরচ হবে ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা।

আর আপনার কাজের ভিসা নিয়ে ক্রোয়েশিয়া যেতে সব মিলিয়ে খরচ পড়বে ৭ লক্ষ থেকে ৮ লক্ষ টাকা। তবে আমি এখানে যে পরিমাণ খরচ তুলে ধরেছি তা সময় সাপেক্ষে কম বেশি হতে পারে। কেননা খরচের পরিমাণ নির্ভর করে ডলারের মূল্য হ্রাস হ্রাস – বৃদ্ধির উপর। ডলারের মূল্য কম বেশি হলে খরচের পরিমাণ কম বেশি হবে।

ক্রোয়েশিয়া কাজের ভিসা

করোনা মহামারীর পর ক্রোয়েশিয়ার অভ্যন্তরে বিভিন্ন অবকাঠামোর উন্নয়নের জন্য ক্রোয়েশিয়ার সরকার বিভিন্ন দেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগ দিচ্ছে। সেই সাথে বাংলাদেশ থেকে তারা শ্রমিক নিয়োগের কথা বলেছে। আপনারা যারা কাজের ভিসা নিয়ে ক্রোয়েশিয়া যেতে ইচ্ছুক তারা যেতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে দক্ষ শ্রমিক হতে হবে।

কাজের দক্ষতা ব্যতীত তারা আপনাকে ভিসা প্রদান করবে না। কাজের ভিসা পাওয়ার জন্য তাদের কিছু শর্ত রয়েছে। সে সকল শর্ত আপনাকে পূরণ করতে হবে। এরপর সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে তবে আপনি কাজের ভিসা নিয়ে ক্রোয়েশিয়া যেতে পারবেন। তাদের প্রথম শর্ত আপনার সকল কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকতে হবে।

কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকার পর পরবর্তী শর্ত আপনার সেই দেশের ভাষা অথবা ইংরেজি ভাষার প্রতি দক্ষ হতে হবে। আর যদি আপনার সবকিছু ঠিকঠাক থাকে তাহলে আপনি অতি সহজেই কাজের ভিসা পেয়ে যাবেন। তাদের প্রধান শর্ত হলো আপনাকে যে কাজের ভিসা দেয়া হবে সেই কাজের প্রতি আপনার দক্ষতা সার্টিফিকেট থাকতে হবে।

ক্রোয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে

ক্রোয়েশিয়া যেতে সব মিলিয়ে আপনার খরচ হবে ৭ থেকে ৮ লক্ষ টাকা। যদি আপনি কাজের ভিসা নিয়ে যান তাহলে আপনার এই পরিমাণ খরচ হবে। আবার যদি আপনি পড়াশোনার জন্য স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে যেতে চান তাহলে আপনার খরচ হবে ৪ লক্ষ টাকার মত। আবার যদি আপনি ভিজিট ভিসা নিয়ে যান তাহলে আপনার খরচ হবে ৩ লক্ষ টাকার মত।

সুতরাং বুঝতে পারছেন এখানে আপনার খরচের পরিমাণ নির্ভর করবে আপনি কোন ভিসা নিয়ে ক্রোয়েশিয়া যেতে চান তার উপর। অনেকে আবার চিকিৎসা সেবা নিতে ক্রোয়েশিয়া যায়। কেননা ক্রোয়েশিয়া চিকিৎসা সেবা অত্যন্ত উন্নত মানের হয়ে থাকে। এদেশের অনেক এমপি মন্ত্রী চিকিৎসার জন্য সেখানে গিয়ে থাকে।

ক্রোয়েশিয়া বেতন কত

ক্রোয়েশিয়া কাজের বেতন সর্বনিম্ন ৭০ হাজার টাকা বাংলাদেশী টাকা হিসেবে। আর ক্রোয়েশিয়ার সর্বোচ্চ কাজের বেতন ২ লক্ষ টাকা হয়ে থাকে। এই বেতনের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয় ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় গেলে তার ওপর। তবে যদি আপনি ক্রোয়েশিয়ার কারো বেতন ধরেন তাহলে তার বেতন হবে সর্বনিম্ন ২০ লক্ষ টাকা বাংলাদেশে টাকার হিসেবে।

আর যারা বাংলাদেশ থেকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে ক্রোয়েশিয়া যায় তাদের বেতন হয় ৭০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা। আশা করি ক্রোয়েশিয়া কাজের বেতন সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন। তবে বেতনের পরিমাণ সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনার কাজের ধরন অনুসারে। যেমন ড্রাইভিং ভিসার ও প্লাম্বিং ভিসার বেতন বেশি।

আবার যদি আপনি ক্লিনার ভিসা অথবা কনস্ট্রাকশন ভিসা নিয়ে ক্রোয়েশিয়া যেতে চান তাহলে আপনার বেতনের পরিমাণ কম হবে। তাই সবচেয়ে ভালো ক্রোয়েশিয়া যাওয়ার পূর্বে প্লাম্পিংয়ের কাজ, রাজমিস্ত্রির কাজ, ড্রাইভিং কাজ অথবা হোটেলের কাজ নিয়ে ক্রোয়েশিয়া যাওয়া। কেননা এ ক্ষেত্রে বেতনের পরিমাণ বেশি।

ক্রোয়েশিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা

বর্তমানে ক্রোয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগ দিচ্ছে। তারা বাংলাদেশ থেকে ১২০০০ হাজার শ্রমিক প্রাথমিক অবস্থায় নিবে। আপনার পরিচিত কেউ যদি ক্রোয়েশিয়া থেকে থাকে তাহলে আপনি খুব সহজেই এই হিসাবে পেতে পারেন। আর যদি আপনার পরিচিত কেউ না থাকে তাহলে ভাল কোন বিষয়ে এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা আবেদন করে নিতে পারেন।

ভিসা আবেদন করার পূর্বে আপনি যে ভিসা নিয়ে ক্রোয়েশিয়া যেতে চান সেই কাজ সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। এরপর আপনাকে সে দেশের ভাষা জানা থাকতে হবে। যদি আপনার সবকিছু ঠিকঠাক থাকে তাহলে আপনি অতি সহজেই ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেয়ে যাবেন। অন্যথায় আপনি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাবেন না।

ক্রোয়েশিয়া ভিসা ফর বাংলাদেশি

ক্রোয়েশিয়া এর জন্য ক্রোয়েশিয়া ভিসা বর্তমানে এভেইলেবল। বর্তমানে বাংলাদেশের অনেক নাগরিক ইন্ডিয়ার দিল্লি এম্বাসির মাধ্যমে অতি সহজেই ক্রোয়েশিয়া যাচ্ছে। আপনি চাইলে বাংলাদেশের কোন ভালো এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। তাহলে তারা আপনার ভিসা প্রসেসিং খুব সহজে করে দিবে।

বাংলাদেশ থেকে সরাসরি ক্রোয়েশিয়া যেতে একটু সময় লাগে। তবে ভারত থেকে খুব সহজেই ক্রোয়েশিয়া যাওয়া যায়। যার কারণে বাংলাদেশের ভিসা এজেন্সির মালিকেরা ভারত থেকে ভিসা আবেদন করে থাকে। আর এই উপায়ে অসংখ্য মানুষ কাজের ভিসা নিয়ে ক্রোয়েশিয়া যাচ্ছে। আবার কেউবা পড়াশোনা করার জন্য ক্রোয়েশিয়া যাচ্ছে।

Read More 

Hosting Partner