পড়াশোনা করার জন্য ফিনল্যান্ড সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি দেশ। বাংলাদেশ থেকে অসংখ্য শিক্ষার্থী পড়াশোনার জন্য ফিনল্যান্ড গিয়ে থাকে। আবার অনেকেই ভাবছে ফিনল্যান্ড পড়াশুনা করার জন্য। আবার অনেকেই ভাবছে কাজের ভিসা নিয়ে ফিনল্যান্ড যাওয়ার জন্য। কেননা ফিনল্যান্ড রয়েছে পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন কাজের সুযোগ সুবিধা। আবার যারা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে ফিনল্যান্ড যাবেন তাদের জন্য রয়েছে নানা সুযোগ সুবিধা।
আমি আজকের এই পোস্টে আপনি কিভাবে ফিনল্যান্ড যেতে পারবেন, ফিনল্যান্ড যেতে আপনার কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হবে, ফিনল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগে, ফিনল্যান্ড কাজের বেতন কত এসব কিছু বিস্তারিত তুলে ধরবো। তাই যারা ফিনল্যান্ড যাওয়ার জন্য মনস্থির করেছেন আজকের পোস্টটি তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। চলুন এবার নিচে থেকে ফিনলান্ড সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
ফিনল্যান্ড স্টুডেন্ট ভিসা
বাংলাদেশ থেকে বেশিরভাগ মানুষ পড়াশোনার জন্য ফিনল্যান্ড যায়। আবার কিছু কিছু রয়েছে যারা কাজের ভিসা নিয়ে ফিনল্যান্ড যায়। তবে পড়াশোনার জন্য বেশি ফিনল্যান্ড গিয়ে থাকে। কেননা ফিনল্যান্ডে পড়াশোনার মান খুবই উন্নত। ফিনল্যান্ডে পড়াশোনা করার জন্য যেতে চাইলে আপনাকে প্রথমে ফিনল্যান্ড স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন করতে হবে।
ফিনল্যান্ড স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনের জন্য ৩৬০ ইউরো থেকে ৪০০ ইউরো আবেদন ফি দিতে হয়। এই পরিমাণ টাকা অনলাইনের মাধ্যমে অথবা ব্যাংকের মাধ্যমে তাদের দিতে হবে। এরপর তারা আপনার আবেদন একসেপ্ট করবে। আর আপনার যদি প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকে এবং আপনার ব্যাংক স্টেটমেন্ট ঠিক থাকে তাহলে তার আপনাকে স্টুডেন্ট ভিসা দিবে।
আর যদি আপনার কোন একটি কাগজপত্র ঠিক না থাকে তাহলে তার আপনাকে কোন ভাবেই স্টুডেন্ট ভিসা প্রদান করবে না। তাই ফিনল্যান্ড এর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ডিগ্রী প্রোগ্রাম শুরু হওয়ার এক মাস পূর্বেই আপনাকে আবেদন করতে হবে। এরপর ভিসার জন্য আপনাকে সর্বোচ্চ একমাস অপেক্ষা করতে হবে।
ফিনল্যান্ড স্টুডেন্ট ভিসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে ফিনল্যান্ডে যেতে চাইলে আপনার কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে। এ সকল কাগজপত্র আপনার হাতের নিকটে রাখতে হবে। যদি আপনার এ সকল কাগজপত্রের কোনটি না থাকে তাহলে আপনাকে ভিসা প্রদান করা হবে না। নিচে থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখে নিন।
১। কমপক্ষে ২ বছর মেয়াদ সম্পন্ন একটি বৈধ পাসপোর্ট।
২। পাসপোর্ট সাইজের সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড সহ ১০ কপি ছবি।
৩। ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি।
৪। পিতা মাতার ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি।
৫। HSC এর সার্টিফিকেটের ফটোকপি।
৬। করনার সার্টিফিকেটের ফটোকপি।
৭। বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফার্মেশন লেটার।
৮। আপনার ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
ফিনল্যান্ড স্টুডেন্ট ভিসা খরচ
স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে ফিনল্যান্ড যেতে সব মিলিয়ে খরচ পড়ে ৪ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা। যেহেতু খরচের পরিমাণ ইউরো এর মূল্য বৃদ্ধির উপর নির্ভর করে তাই খরচের পরিমাণ কিছুটা কম বেশি হতে পারে সময় সাপেক্ষে। তবে আমি এখানে যে খরচের পরিমাণ তুলে ধরেছি তারা বাংলাদেশী টাকার হিসেবে ও বর্তমান সময়ের হিসেবে।
যেহেতু সারা বিশ্বে এখন ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে পৃথিবীর অন্যান্য টাকার মান কিছুটা রাস বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই সময়ের সাথে সাথে আপনার খরচের পরিমাণ যেকোনো সময় বৃদ্ধি পেতে পারে, আবার যেকোনো সময় কমে যেতে পারে। তাই নির্দিষ্ট করে খরচের পরিমাণ বর্তমানে বলা যাচ্ছে না।
ফিনল্যান্ড উচ্চশিক্ষা
বাংলাদেশ থেকে বেশিরভাগ মানুষ উচ্চ শিক্ষার জন্য কানাডা ও ফিনল্যান্ড গিয়ে থাকে। ফিনল্যান্ডে পড়াশোনার মান অত্যন্ত উন্নত। যার ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষ সেখানে যায় উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য। বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষা লাভের জন্য বর্তমানে ফিনল্যান্ড অবস্থান করছে।
আবার অনেক শিক্ষার্থী রয়েছে যারা তাদের উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য ফিনল্যান্ড যাওয়ার জন্য মনস্থির করেছে। কেননা ফিনল্যান্ডে রয়েছে বিশ্ব বিখ্যাত সব ইউনিভার্সিটি। আবার সে সকল ইউনিভার্সিটি তে বহিরাগতদের জন্য রয়েছে নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা ও কম খরচে উচ্চ ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ।
ফিনল্যান্ড যাওয়ার নিয়ম
ফিনল্যান্ড যাওয়ার জন্য আপনাকে ভিসা এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করতে হবে। অথবা আপনার পরিচিত কেউ যদি ফিনল্যান্ড থেকে থাকে তার মাধ্যমে ভিসা আবেদন করে নিতে হবে। যদি আপনার পরিচিত কেউ না থাকে তবে সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভিসা এজেন্সির সাথে অথবা দালালের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। এ দেশে অনেক দালাল রয়েছে যারা অতি সহজে ভিসা বের করে দিতে পারে।
আপনি চাইলে সে সকল দালালের শরণাপন্ন হতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তারা আপনাকে সমস্ত প্রসেসিং করে দেবে এবং ভিসা বের করে দিবে। তবে সবচেয়ে ভালো পরিচিত কেউ যদি সেখানে থাকে। সে ক্ষেত্রে আপনার ভিসা পেতে এক্সট্রা খরচ করতে হবে না। এমনকি আপনার ভোগান্তির শিকার হতে হবে না। আপনি খুব সহজে ভিসা পেয়ে যাবেন।
ফিনল্যান্ড স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন
ফিনল্যান্ড স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনের জন্য আপনাকে যারা বিদেশে পড়াশোনার জন্য ভিসা বের করে থাকে তাদের শরণাপন্ন হতে হবে। আবার আপনি চাইলে নিজেও অনলাইনে আবেদন করে নিতে পারবেন। তবে সবচেয়ে ভালো যারা বিদেশে পড়াশোনার জন্য ভিসা বের করে থাকে তাদের সাথে যোগাযোগ করা। এই ক্ষেত্রে কিছুটা বেশি টাকা খরচ হলেও আপনাকে কোন প্রকার ভোগান্তির শিকার হতে হবে না।
তারা আপনার ভিসা প্রসেসিং করে দেবে। তবে এক্ষেত্রে মনে রাখবেন ভিসা আবেদনের সময় আপনার পরিচয় পত্র ও ঠিকানা যাতে সঠিকভাবে লেখা হয়। এক্ষেত্রে কোন প্রকার ভুল হলে আপনার ভিসা ক্যানসেল করা হবে। তাই ভিসা আবেদনের পূর্বে এ বিষয়ে মাথায় রেখে কাজ করবেন।
ফিনল্যান্ডে স্কলারশিপ
ফিনল্যানডে স্কলারশিপ নিয়ে পড়াশোনার জন্য রয়েছে সুবর্ণ সুযোগ। এখানকার নামিদামি সকল ইউনিভার্সিটি স্কলারশিপ দিয়ে থাকে বহিরাগতদের জন্য। যারা বাইরে থেকে ফিনল্যান্ডে পড়াশোনার জন্য যায় তাদের জন্য ফিনল্যান্ডের বড় বড় ইউনিভার্সিটি স্কলারশিপ দিয়ে থাকে। আপনি যদি স্কলারশিপ নিয়ে ফিনল্যান্ডে যেতে পারেন তাহলে আপনার খরচ অনেকটা কমে যাবে।
তবে মনে রাখবেন স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য আপনাকে আবেদন করতে হবে। স্কলারশিপ আবেদন করলে তারা আপনার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে দেখবে আপনাকে স্কলারশিপ দেয়া যায় কিনা। যদি আপনি স্কলারশিপ পেয়ে যান তাহলে আপনার খরচ চার ভাগের এক ভাগ হবে। তবে সকল বহিরাগত শিক্ষার্থীকে ২০% ছাড় দেয়া হয়।
আর আপনার যদি স্কলারশিপ থাকে তাহলে আপনি ৪০% থেকে ৫০% খরচে ফিনল্যান্ডের বড় বড় ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করতে পারবেন। সুতরাং বুঝতে পারছেন স্কলারশিপ আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে যদি আপনি মেডেল ক্লাস ফ্যামিলি থেকে বিলং করেন।
Read More