শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উক্তি, স্ট্যাটাস, বাণী, সাহিত্য, কবিতা

আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন। আজ আমরা আপনাদের মাঝে নিয়ে এসেছি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের নিয়ে লেখা উক্তি, স্ট্যাটাস, বাণী, ক্যাপশন সাহিত্য, ছন্দ ও কবিতা। আশা করি আপনাদের কাছে অনেক ভালো লাগবে। চলুন তাহলে নিচে থেকে দেখে নেওয়া যাক।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উক্তি

1. যে সমাজ দুঃখির দুঃখ বোঝেনা, বিপদের সাহস দেয় না, শুধু চোখ রাঙ্গায় আর গলা টিপে ধরে, সে সমাজ আমার নয়। আমার মত গরীবের নয়, এ সমাজ বড়লোকের জন্য।

2. একজন আরেক জনের কেবলমাত্র সহানুভূতি আর ভালোবাসা দাঁড়ায় বুঝতে পারে; বয়স এবং বুদ্ধি দিয়া নয়। সংসারে যে যত ভালোবাসিয়াছে পরের হৃদয়ের ভাষা তাহার কাছে তত ব্যক্ত হইয়া উঠিয়াছে।

3. মানুষের স্বভাবই তো এই; একটুখানি দোষ পাইলে পূর্ব মুহূর্তের সমস্তই নিঃশেষে ভুলিয়া যাইতে পারে।

4. শান্তি! শান্তি! শান্তি! শুনে শুনে কান একবারে ঝালাপালা হয়ে গেছে। কিন্তু কি অসত্য এতদিন ধরে কারা প্রচার করেছে জানো?

5. পরের শান্তি হরণ করে যারা পরের রাস্তা জুড়ে অট্টালিকার প্রাসাদ বানিয়ে বসে আছে, তারাই এইসব মিথ্যা মন্ত্রের ঋষি।

6. বঞ্চিত, পীড়িত, উপদ্রুত নর-নারীর কানে অবিশান্ত এই মন্ত্র জপ করে করে তাদের এমন করে তুলেছে যে, আজ তারাই অশান্তির নামে চমকে উঠে ভাবে এই বুঝি পাপ, এ বুঝি অমঙ্গল।

7. বাঁধা গরু অনাহারে মরতে দেখেছো? সে দাঁড়িয়ে মরে তবু সে জীর্ণ দড়িটা ছিড়ে ফেলে মনিবের শান্তি নষ্ট করে না।

8. ছেলেবেলায় একবার যাকে ভালোবাসা যায়, তাকে কি কখনো ভোলা যায়?

9. লাভ ক্ষতিই কি সংসারে সব? মায়া-মমতা- ভালবাসাটা কি কিছু নয়?

10. মিথ্যা বলিয়া তো কোন বস্তুরই অস্তিত্ব এ বিশ্বব্রক্ষান্ডে চোখে পড়ে না। মিথ্যা শুধু মানুষের বুঝিবার ও বুঝাইবার ফল। সোনাকে পিতল বলিয়া বুঝানোও মিথ্যা, বোঝাও মিথ্যা।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্ট্যাটাস

11. পর দুঃখে ব্যথা পাইয়া চোখের জল ফেলার সহজ নহে, তাহা অস্বীকার করি না; কিন্তু তাই বলিয়া সেই দুঃখের মধ্যে নিজের দুই হাত বাড়াইয়া আপনাকে জড়িত করিতে যাওয়া সে ঢের বেশি কঠিন কাজ।

12. বড় প্রেম শুধু কাছেই টানে না, দূরেও ঠেলে দেয়।

13. যাকে তাকে গছিয়ে দেওয়ার নামই বিবাহ নয়! মনের মিল না হলে বিবাহ করাই ভুল।

14. পক্ষপাতহীন বিচারকই ন্যায় বিচার করতে পারে।

15. সৃষ্টির কালই হলো যৌবনকাল।

16. অতীত মুছে ফেলার শ্রেষ্ঠ উপায় হচ্ছে স্থান পাল্টানো।

17. ভালোবাসাটার মত এত বড় শক্তি, এত বড় শিক্ষক সংসারে বুঝি আর নাই। ইহা পারে না এত বড় কাজও বুঝি কিছু নাই।

18. মনে করি চাঁদ ধরি হাতে দেই পেড়ে বাবলা গাছে হাত লেগে আঙ্গুল গেল ছিড়ে।

19. সত্যের স্থান বুকের মধ্যে, মুখের স্থান নয়। কেবল মুখ দিয়ে বার হয়েছে বলেই কোন জিনিস কখনো সত্য হয়ে ওঠে না।

20. হৃদয়ের কোমলতা ও দুর্বলতা এক বস্তু নয়।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাণী

21. যাহা জটিল ও দুর্বোধ্য, তাহার বিশদ ভাবে পরিষ্কার করিয়া বুঝাইয়া বলিবার সময় ও সুবিধা না হওয়া পর্যন্ত একেবারে না বলাই ভালো।

22. জীবনের অনেক বড় বস্তুকে চেনা যায় শুধু তাকে হারিয়ে।

23. আমি যে মেয়ে মানুষ! মেয়ে মানুষের কি কখনো অসুখ হয়, না সে মরে? কোথাও শুনেছ। অযত্নে অত্যাচারে মেয়ে মানুষ মরে গেছে।

24. মহত্ব জিনিসটা কোথাও ঝাকে ঝাকে থাকে না। তাকে সন্ধান করে খুঁজে নিতে হয়।

25. রাজার আইন, আদালত, জর্জ, ম্যাজিস্ট্রেট সমস্ত মাথার ওপরে থাকিলেও দরিদ্র প্রতিবন্ধীকে নিঃশব্দে মরিতে হইবে।

26. মানুষকে ব্যথা দেবার একটা সীমা আছে, সেটা ডিঙিয়ে যেও না।

27. আমি ঠকিনি, কারন আমিও ভালোবাসতে পেরেছিলাম। কিন্তু ঠকেছে সে, যে ভালবাসতে পারিনি।

28. কত হারাইয়া গিয়াছে টের পাই, কিন্তু তবু তো শিকল ছিড়িয়া যায় না।

29. মেয়েরা পুরুষের হৃদয় এক নিমিষেই চিনে নিতে পারে, বিধাতার দেওয়া শক্তি। অথচ আশ্চর্যের ব্যাপার ওরা নিজেদের হৃদয় নিজেরা চিনতে পারে না।

30. কোন বড় ফলই বড় রকমের দুঃখ ভোগ ছাড়া পাওয়া যায় না।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সাহিত্য

31. রাগ করে শোয়া যেতে পারে কিন্তু রাগ করে ঘুমানো যায় না। বিছানায় পড়ে ছটফট করার মত শাস্তি আর নেই।

32. যখন তুমি কাউকে ভালবাসবে তখন বুঝবে ব্যথা কি।

33. যদির উত্তর যদি দিয়েই হয়। অনিশ্চিত প্রস্তাবের নিশ্চিত মীমাংসা আশা করতে নেই।

34. অনুকরণে মুক্তি আসে না, মুক্তি আসে জ্ঞানে।

35. মানুষের শুভ ইচ্ছা যখন বুক থেকে সত্য হয়ে বার হয়, তখন সে চেষ্টা ব্যর্থ হয় না।

36. যা ভালো কাজ, তার অধিকার মানুষ সঙ্গে সঙ্গেই ভগবানের কাছে পায়। মানুষের কাছে হাত পেতে নিতে হয় না ।

37. মানুষের মরণ আমাকে বড় আঘাত করে না, পরে মনুষত্বের মরন দেখিলে।

38. এ জীবনে ভালোবাসার ব্যবসা অনেক করেছি । কিন্তু একটি বার মাত্র ভালবেসেছি। সে ভালোবাসার অনেক মূল্য, অনেক শিখেছি।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ক্যাপশন

39. স্বেচ্ছায় নেওয়া দুঃখ ঐশ্বর্যের মতই ভোগ করা যায়।

40. ভালোবাসার ক্ষেত্রে সেই বুদ্ধিমান, যে ভালোবাসে বেশি কিন্তু প্রকাশ করে কম।

41. মন্দ তো ভালোর শত্রু নয় , ভালোর শত্রু তার চেয়েও যে আরো ভালো সে।

42. তিক্ততার মধ্যে দিয়ে সংসার ছেড়ে শুধু হতভাগ্য লক্ষ্মী ছাড়া জীবনই যাপন করা চলে, কিন্তু বৈরাগ্য সাধন হয় না।

43. শ্রদ্ধা ও স্নেহের অভিনন্দন মন দিয়ে গ্রহণ করতে হয়, তার জবাব দিতে নেই ।

44. যেদিন বুঝবে রূপটাও মানুষের ছায়া, মানুষ নয়! সেদিনই শুধু ভালোবাসার সন্ধান পাবে।

45. আমার ফল কি শুধু অপরাধীই পায় , যে ক্ষমা করে সে কি কিছু পায় না।

46. পুরুষ মানুষ যত মন্দই হয়ে যাক, ভালো হতে চাইলে তাকে কেউ তো মানা করে না। কিন্তু মেয়েদের বেলায় সব পথ বন্ধ কেন?

47. আমি তো চললুম। পথের কষ্ট আমাকে নিতে হবে, সে নিবারণ করার সাধ্য কারো নেই।

48. যেখানে ফেলে যাওয়াই মঙ্গল, সেখানে আঁকড়ে থাকাতেই অকল্যাণ।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ছন্দ

49. তারাই মহৎ প্রাণ, যারা অন্যদেরকে বিপদ থেকে উদ্ধার করতে গিয়ে নিজের বিপদের কথা মনে রাখে না।

50. বনের পাখির চেয়ে পিঞ্জরের পাখিটায় বেশি ছটফট করে ।

51. প্রবল জ্বর উগ্র নেশার মত, অনেক আশ্চর্য কথা মানুষের ভেতর হতে টানিয়া আনে।

52. ভ্রমণ করা এক, আর তাহা প্রকাশ করা আর এক। যাহার দুই পা আছে সেই ভ্রমণ করিতে পারে কিন্তু দুই পা থাকিলেই তো আর লেখা যায় না। সে যে ভারী শক্ত।

53. না জানিয়া নারীর পলকে অবিশ্বাস করিয়া সংসারে বরঞ্চ ঠকাও ভালো, কিন্তু বিশ্বাস করিয়া পাপের ভাগি হওয়ার লাভ নেই।

54. বুদ্ধি দিয়ে যারা একেবারেই মানে না, তাহারও ভয়ের জায়গায় আসিয়া পড়িলে ভয়ে মূর্ছা যায়।

55. হাতের লক্ষ্মী পায়ে ঠেলিয়া, গত কথা লইয়া পরিতাপ করিয়া লাভ নাই।

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা

কবিতার নাম “মমতা”

প্রকৃতির শুভরঙ্গী মেঘলা কোমললতা,
কাশ তারাদের বদনে চোখ জলে ভরিয়া ঝর্ণা,
মা তুমি, মমতা, আমার প্রিয়া।

আকাশ পতাকার প্রেমরঙ্গী আকাশ পথে,
চাঁদের তারাদের মিলে মেলে হাসে মন আনন্দে,
মা তুমি, মমতা, আমার প্রিয়া।

এই প্রিয় মা সাত মহিনার আঙ্গিনায়,
সেই বাতাসে প্রিয়াকে সখী বানাইয়া,
মা তুমি, মমতা, আমার প্রিয়া।

এই প্রিয়া মা চোখের নীহারিকায়,
আমার প্রিয়াকে করে পথ দেয় আকাশপথে,
মা তুমি, মমতা, আমার প্রিয়া।