প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র মাল্টা মাত্র ৩১৬ বর্গ কিলোমিটার জায়গা নিয়ে গঠিত। মালটা সাধারণত তিনটি দ্বীপকে একত্রে করে একটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। স্বল্প আয়তনের এই দেশ সম্পর্কে অনেকেরই অজানা। তবে বর্তমানে মালটা মালদ্বীপের মত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে দিন দিন। আমাদের আজকের পোষ্টের বিষয় মাল্টা দেশ নিয়ে। এই আর্টিকেলটি করার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন মালটা যেতে কত টাকা লাগে।
আরো জানতে পারবেন মালটা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার উপায়, মালটা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খরচ কত, মালটা ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় আবেদন করার নিয়ম। যারা কাজের উদ্দেশ্যে বা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে মালটা দেওয়ার জন্য আগ্রহী তারা সম্পূর্ণ আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে দেখে নিন। কেননা কোন দেশে যাওয়ার পূর্বে সে দেশ সম্পর্কে ও তার খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া ভালো।
মাল্টা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
দুই উপায়ে আপনি মাল্টা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে পারেন। একটি সরকারিভাবে আপনি ভিসা আবেদন করে নিতে পারেন। অন্যটি আপনি বেসরকারিভাবে ভিসা আবেদন করতে পারেন। আপনি যেকোনো একটি উপায়ে ভিসা আবেদন করে মালটা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেয়ে যাবেন। তবে সরকারিভাবে ভিসা আবেদন করলে আপনার খরচ হবে অনেক কম। সরকারের ভাবে ভিসা আবেদন করলে আপনার খরচ হবে ৩ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ টাকা।
আর যদি আপনি বেসরকারিভাবে ভিসা আবেদন করেন তাহলে আপনার খরচ হবে ৮ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা। আমি এখানে যে খরচের পরিমাণ তুলে ধরেছি তা আপনার ভিসা প্রসেসিং থেকে শুরু করে বিমান ভাড়া সবকিছু মিলিয়ে। তবে এখানে খরচের পরিমাণ বর্তমান ডলার রেট অনুসারে ধরা হয়েছে। তাই ডলারের মান কমবেশি হলে খরচের পরিমাণ কম বেশি হবে। তবে খুব একটা কম বেশি হবে না।
আপনি সরকারি ভাবে ভিসা আবেদন করলে ভিসা পেতে আপনার একটু সময় লাগবে। এক্ষেত্রে আপনার বছরখানেক সময় লাগতে পারে। তবে যদি আপনি বেসরকারিভাবে ভিসা আবেদন করেন তাহলে ৩ মাসের মধ্যে আপনার ভিসা প্রসেসিং কমপ্লিট হবে। এরপর আপনি যদি পরিপূর্ণভাবে টাকা জমা দিয়ে থাকেন তাহলে আপনি সাথে সাথেই মালটা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে পারবেন।
মাল্টা যেতে কত টাকা লাগে
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে মালটা যেতে ৮ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা লাগে। তবে এখানে খরচের পরিমাণ তুলে ধরা হয়েছে কোন ভিসা এজেন্সির মাধ্যমে যদি আপনি মালটা যেতে চান সে ক্ষেত্রে আপনার এই পরিমাণ খরচ হবে। আর যদি আপনি সরকারিভাবে মালটা যেতে চান তবে আপনার খরচ হবে ৩ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ টাকা। তবে এক্ষেত্রে একটু বেশি সময় লাগে।
তবে সবচেয়ে ভালো যদি আপনার পরিচিত কেউ মালটা থাকে সে যদি আপনার জন্য ভিসা পাঠায় তবে আপনার খরচের পরিমাণ অনেক কম হবে। এক্ষেত্রে আপনি ২ লক্ষ থেকে ৩ লক্ষ টাকায় মালটা যেতে পারবেন। তাই মালটা দেওয়ার পূর্বে প্রথমে খোঁজ নিয়ে দেখেন আপনার আশেপাশের কেউ কাজের ভিসা নিয়ে মালটা গেছে কিনা। যদি গিয়ে থাকে তাহলে তার মাধ্যমে ভিসা আবেদন করুন।
মাল্টা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদনের নিয়ম
মালটা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদনের জন্য আপনি তিনটি পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। প্রথমটি হল বেসরকারিভাবে আপনি ভিসা আবেদন করে নিতে পারেন আপনার পরিচিত কোন ভিসা এজেন্সির মাধ্যমে। দ্বিতীয়ত আপনি সরকারিভাবে ভিসা আবেদন করে নিতে পারেন। আবার আপনি যদি স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে চান তাহলে আপনি অনলাইনের মাধ্যমে ভিসা আবেদন করে নিতে পারেন।
অনলাইনের মাধ্যমে ভিসা আবেদন করলে visa.vfsglobal.com এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে ভিসা আবেদন করে নিতে হবে। তবে মনে রাখবেন ভিসা আবেদনের সময় কোন ভাবেই যাতে আপনার নাম ও ঠিকানা ভুল না হয়। ভুল হলে আপনার ভিসা ক্যানসেল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে নিজে থেকে ভিসা আবেদন করলে ঝামেলার সম্মুখীন হতে হয়। আর যদি আপনি ভিসা এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা আবেদন করেন তাহলে সমস্ত ভিসা প্রসেসিং তারা করে দেবে।
যার ফলে আপনাকে কোন প্রকার ভোগান্তির হতে হবে না। তাই ভিসা আবেদনের জন্য ভালো কোন এজেন্সি দেখে তাদের মাধ্যমে ভিসা আবেদন করে নিন। আর আপনি চাইলে নিজেও করে নিতে পারেন। আবার আপনার পরিচিত কেউ যদি মালটা থেকে থাকে তার মাধ্যমে আবেদন করে নিতে পারেন।
মাল্টা বেতন
মালটা কাজের বেতন নির্ভর করে আপনার কাজের ধরনের উপর। মালটা সর্বোচ্চ কাজের বেতন ৬ লক্ষ টাকা। আর সর্বনিম্ন কাজের বেতন ৮০ হাজার টাকা। এখানে সর্বনিম্ন কাজের বেতন দেওয়া হয় বাইরের দেশ থেকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে কেউ মালটা গেলে তাদের। মালটায় সর্বোচ্চ বেতন দেয়া হয় ইঞ্জিনিয়ারদের। তারা ৩ লক্ষ থেকে ৬ লক্ষ টাকা পেয়ে থাকে তাদের পজিশন অনুসারে।
আপনি যদি ভালো ওয়েব ডেভলপার হয়ে থাকেন তাহলে আপনার বেতন হবে ২ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ টাকা। একজন ভালো শেষফের বেতন হয়ে থাকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা। আপনি যদি কনস্ট্রাকশন কাজের ভিসা নিয়ে মালটা যান তাহলে আপনার বেতন হবে ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা। আর আপনি যদি হোটেল অথবা রেস্টুরেন্ট ভিসা নিয়ে মালটা যেতে পারেন তাহলে আপনার বেতন হবে ১ লক্ষ থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
মাল্টা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খরচ
সাধারণত মাল্টার ভিসা বের করতে খরচ হয় ৮০ হাজার টাকার মত। তবে এখানে আপনার সম্পূর্ণ ভিসা প্রসেসিং ও বিমান ভাড়া থেকে শুরু করে সবমিলিয়ে মালটা যাতে আপনার খরচ হবে ১০ লক্ষ টাকার মত। বাংলাদেশ থেকে কোন দেশে যেতে বেশি টাকা খরচ হওয়ার মূল কারণ এখানে দালালের সংখ্যা বেশি। এখানে এক একজন টাকা খেতে খেতে খরচের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।
তবে মালটা ভিসা খরচ সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনার ভিসা ক্যাটাগরির উপর। এখানে যদি আপনি বেসরকারিভাবে মালটা যেতে চান তাহলে আপনার খরচ হতে পারে সর্বোচ্চ ৪ লক্ষ টাকা। আর যদি আপনি বেসরকারিভাবে মালটা যেতে চান তাহলে আপনার খরচ হবে সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা।
বাংলাদেশ থেকে মাল্টা যেতে কত টাকা লাগে
বাংলাদেশ থেকে সরকার এভাবে মালটা যেতে খরচ হয় ৩ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ টাকা। আর বাংলাদেশ থেকে বেসরকারিভাবে মালটা যেতে খরচ হয় ৮ লক্ষ থেকে 10 লক্ষ টাকা।
মাল্টা বেতন কেমন
দেশ অনুসারে মালটা বেতনের পরিমাণ অনেক বেশি। মালটা সর্বনিম্ন কাজের বেতন ৮০ হাজার টাকা বাংলাদেশের টাকা হিসেবে। আর মালটা সর্বোচ্চ কাজের বেতন ৬ লক্ষ টাকা। এখানে সর্বোচ্চ কাজের বেতন দেয়া হয় সেই দেশের ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ারদের। ডেভলপারদের বেতন ও অনেক বেশি।
মাল্টা সর্বনিম্ন বেতন কত
মালটা সর্বনিম্ন কাজের বেতন দিয়ে থাকে বাংলাদেশে টাকার হিসেবে ৮০ হাজার টাকা।
মাল্টা স্টুডেন্ট ভিসা খরচ
আপনি যদি স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে মালটা যেতে চান তাহলে আপনার খরচ হবে ৪ লক্ষ টাকার মত। এখানে সর্বোচ্চ খরচের পরিমাণ ধরা হয়েছে। যদি আপনি ভাল কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চান তাহলে আপনার এই পরিমাণ খরচ হবে সবমিলিয়ে। তবে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে মালটা গেলে আপনি স্কলারশিপ পাবেন। যার ফলে আপনার খরচের পরিমাণ অনেক কমে যাবে।
Read More