হ্যালোইন বা ” অল হ্যালোজ ইভ ” খ্রিস্টানদের একটি ধর্মীয় উৎসব। খ্রিস্টানরা প্রতিবছর অক্টোবর মাসের 31 তারিখে হ্যালোইন ডে পালন করে থাকে। হ্যালোইন ডে পালন করা হয় বিশ্বের সমস্ত মৃত, সাধু ও বিদেহী আত্মার স্মরণ করে।হ্যালোইন উৎসবের প্রাক্কালে যেই মূল ধারণা বা থিম অনুসরন কর হয় তা হলো “হাস্যরস ও উপহাসের সাহায্যে মৃত্যুর ক্ষমতার মুখমুখি হওয়া। অনেক পণ্ডিতদের মতে, “হ্যালোইন” বা “অল্ হ্যালোজ্ ইভ্” হলো খ্রিস্টধর্মের একটি বার্ষিক উৎসব যা প্রাথমিকভাবে কেলটিক ফসল কাটার উৎসব দ্বারা প্রভাবিত।
অন্যান্য পণ্ডিতদের মতে, এই উৎসবটির স্বতন্ত্র উৎপত্তি সামহেন থেকে এবং এর মূলে সরাসরি খ্রিস্টধর্মের প্রভাব বিদ্যমান। পশ্চিমা সংস্কৃতির অংশ হলেও, ইদানিংকালে বাংলাদেশেও জনপ্রিয় হচ্ছে হ্যালোইন উৎসব, তবে বেশ সীমিত পরিসরে আর মূলত অভিজাত এলাকায়। আর এর পেছনে কারণ হিসেবে দাঁড়া করানো যায় বিদেশি মুভি আর টিভি সিরিজের প্রভাবকে।
হ্যালোইন কি
হ্যালোইন হল ” অল হ্যালোজ ইভ ” এর সংক্ষিপ্ত রূপ। এছাড়াও হ্যালো ইন অল সেইন্টস’ ইভ হিসাবে পরিচিত।একটি বার্ষিক উদ্যাপন বা ছুটির দিন যা প্রতি বছর বিভিন্ন দেশে পালিত হয় ৩১ অক্টোবর তারিখে, অল হ্যালোজ’ ডে বা সমস্ত হ্যালোজ দিবসে পাশ্চাত্য খ্রিস্টীয় ভোজোৎসবের প্রাক্কাল। এই দিনটি নিবেদন করা হয় মৃত, সাধু, শহীদ এবং সমস্ত বিশ্বস্ত বিদেহী বিশ্বাসীদের স্মরণ করে।
হ্যালোইন কেন পালন করা হয়
হ্যালোইন শব্দটির উৎপত্তি ” অল হ্যালোজ ইভ ” থেকে যা পবিত্র সন্ধ্যা নামে পরিচিত। ‘হ্যালো’ বলতে বোঝায় ‘পবিত্র কিছু’ কিংবা ‘সাধুজন’।হ্যালোইন ডে সাধারণত মৃত সাধুদের আত্মার স্মরণে প্রতিবছর উদযাপিত হয়। হ্যালোইন শব্দটি প্রথম ১৭৪৫ সালে ব্যবহার করা হয়, ওদিকে ১৫৫৬ সালে দেখা যায় ‘অল হ্যালো’জ ইভ’ কথার প্রচলন।
হ্যালোইন খ্রিস্টানদের একটি ধর্মীয় উৎসব। যেটি বর্তমানে সারা বিশ্বব্যাপী পালিত হয়। দিন দিন হ্যালোইনের প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সারা বিশ্বের মানুষ এখন এর সাথে পরিচিত। সর্বপ্রথম খ্রিস্টানদের পক্ষ থেকে হ্যালোইন ডে উদযাপিত হলেও বর্তমানে তা আন্তর্জাতিক আকারে দেখা দিয়েছে।
হ্যালোইন এর ইতিহাস
প্রতি বছর অক্টোবর মাসের 31 তারিখে হ্যালোইন ডে সাধারণত মৃত সাধুদের আত্মার স্মরণে গির্জায় গির্জায় জ্বালানো হয় মোমবাতি। তার পরদিন পহেলা নভেম্বর পশ্চিমা খ্রিস্টানদের ভোজ ‘অল হ্যালোজ ডে’ বা ‘হ্যালোমাস’, যেদিন ইতিহাসের সকল জানা-অজানা সাধুদের স্মরণ করা হয়। এরপর দুই নভেম্বর স্মরণ করা হয় পরলোকগত খ্রিস্টানদের আত্মাকে। এ তিন দিন মিলিয়ে পালিত হয় পশ্চিমা খ্রিস্টানদের।
এবার আসুন একটু জেনে নেই হ্যালোইন প্রথা প্রচলিত প্রভাব নিয়ে। এটি জানার আগে আমাদের জানতে হবে কেল্টিকদের নিয়ে। কেল্টিক ভাষায় যারা কথা বলে থাকেন তাদের বসবাস মূলত পশ্চিম ইউরোপের ছয়টি অঞ্চলে- ওয়েলস, আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, কর্নওয়াল, ব্রিটানি এবং আইল অফ ম্যান। সম্মিলিতভাবে এদের বলা হয় কেল্টিক অঞ্চল।
এ ভাষায় কথা বলা মানুষের সংখ্যা বর্তমানে ১৯ লক্ষ। কেল্টিক জাতির নানা পৌত্তলিক বা প্যাগান উৎসবের প্রভাব পড়েছিল সদ্য খ্রিস্টধর্মের সাথে পরিচিত হওয়ার পর। তাই প্যাগান কিছু প্রথার ছায়া দেখা যায় হ্যালোইনে। শিশুরা হ্যালোইনের রাতে ‘ট্রিক অর ট্রিট খেলে থাকে। যদি ‘ট্রিট’ না দেয় কোনো বাসার মালিক, তবে তার উপর কোনো ‘ট্রিক’ খাটানো হবে, যা শুভ কিছু হবে না। ইউরোপের মধ্যযুগীয় একটি প্রথা ছিল এই ট্রিক অর ট্রিট, অবশ্য তখন এর নাম ছিল মামিং।
বর্তমানে বাংলাদেশেও হ্যালোইন উৎসব দিন দিন মানুষের মনে জায়গা করে নিচ্ছে। এখন প্রায় প্রতি বছর বাংলাদেশ হ্যালো ইন উৎসব পালিত হচ্ছে। দিন দিন এর বিস্তৃতি বৃদ্ধি পাচ্ছে বাংলাদেশে।
Read More