অর্থনৈতিক বাজারে জাপানের অর্থনীতি সবচেয়ে ভালো। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় জাপান ভূমিকম্প বিধ্বস্ত অঞ্চল হওয়া সত্বেও খুব দ্রুত তারা উন্নতি করছে। তাদের উন্নয়ন চোখে পড়ার মতো। উন্নয়নের এই পথ যাত্রায় তারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগ দিচ্ছে কাজের উদ্দেশ্যে। আমাদের দেশ থেকেও তারা প্রতিবছর কাজের ভিসায় শ্রমিক নিয়োগ দিচ্ছে। জাপানে বিভিন্ন কাজের চাহিদা রয়েছে। তার মধ্যে কিছু কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
আজকের এই পোস্টে আমি সেই বেশি চাহিদা সম্পন্ন কাজগুলো তুলে ধরবো। বর্তমানে প্রযুক্তির এই যুগে ঘরে বসে সবকিছু পাওয়া যায়। আপনিও ঠিক তেমনি ঘরে বসে জানতে পারছেন জাপানে কোন কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন জাপানে কোন কাজের চাহিদা বেশি ও জাপান কোন কোন কাজের জন্য বেতন বেশি দিয়ে থাকে। চলুন এবার বিস্তারিত জেনে নেই।
জাপানে কোন কাজের চাহিদা বেশি
জাপানে যে সকল কাজের চাহিদা রয়েছে তার মধ্যে কৃষিকাজ, হোটেল বয়, মালি, ক্লিনার, মেকানিক্যাল, নার্সিং এ সকাল কাজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। অর্থাৎ জাপান অন্যান্য দেশ থেকে কাজের ভিসায় যে সকল শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে থাকে তার মধ্যে এই সকাল ভিসায় তারা শ্রমিক নিয়োগ দেয়। তবে জাপানে সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়া হয় কৃষি কাজের উপর। আর কৃষি কাজের বেতন অনেক ভালো দিয়ে থাকে।
এছাড়াও জাপান সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা। তাই তারা ক্লিনার পদে শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে থাকে। এছাড়াও হোটেল বয়, মেকানিক্যাল ও নার্সিং এর কাজেও জাপানে চাহিদা রয়েছে। তাই আপনি যদি জাপান কাজের উদ্দেশ্যে যেতে চান তাহলে এই সকল ভিসা নিয়ে জাপান যেতে পারেন। তবে এ সকল ভিসা নিয়ে জাপান যাওয়ার পূর্বে আপনাকে চার মাস ট্রেনিং করতে হবে। ট্রেনিংয়ে পাস করলে তবে আপনি জাপান যেতে পারবেন।
জাপান কাজের ভিসা
কাজের ভিসা নিয়ে জাপান যাওয়ার পূর্বে জেনে রাখা ভালো আপনাকে পরিপূর্ণ দক্ষ না করে জাপান কাজের ভিসা কখনোই দিবে না। এর জন্য তারা চার মাস ব্যাপী একটি ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করেছে। এখানে চার মাস ব্যাপী আপনাকে জাপানি ভাষায় দক্ষ করা হবে এবং সেই সাথে আপনার কাজের বিষয়ে দক্ষ করা হবে। আপনি যদি তাদের ট্রেনিংয়ে পারফরম্যান্স ভালো করেন তাহলে খুবই অল্প খরচে জাপান যেতে পারবেন।
ট্রেনিংয়ে টিকলে জাপান যেতে আপনার শুধু বিমান ভাড়া খরচ হবে। বর্তমানে সরকারিভাবে জাপানে শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। আমাদের দেশ থেকেও সরকারিভাবে কাজের ভিসা নিয়ে জাপান যাওয়া যায়। এক্ষেত্রে আপনাকে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করতে হবে এবং চার মাস ধরে আপনাকে ট্রেনিং করতে হবে। চার মাস ট্রেনিংয়ে পাস করলে তারপর আপনি কাজের ভিসা নিয়ে জাপান যেতে পারবেন।
সরকারিভাবে জাপান যাওয়ার উপায়
যদি আপনি সরকারিভাবে জাপান যেতে চান সে ক্ষেত্রে প্রথমে আপনাকে বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। এছাড়াও এখানে আপনি দালালের মাধ্যমে তাদের সাথে যোগাযোগ করে নিতে পারেন। তাদের সাথে যোগাযোগ করার পর তারা আপনাকে জাপান ট্রেনিং সেন্টারে ভর্তি করে দিবে। এরপর আপনাকে সেখানে চার মাস ব্যাপী ট্রেনিং দেয়া হবে। সেখানে আপনাকে জাপানি ভাষা, আপনি যে কাজে যাবেন সেই কাজে পারদর্শী করা হবে।
এরপর আপনি যদি তাদের দেয়া ট্রেনিং এ পাস করেন তাহলে আপনি জাপানে কাজের ভিসা পেয়ে যাবেন। তবে এক্ষেত্রে একটা সুযোগ সুবিধা রয়েছে জাপান যেতে আপনার খুব একটা খরচ হবে না। কেননা আপনাকে যে কোম্পানি নিয়োগ দেবে তারা আপনার ভিসা খরচ প্লাস প্রাসঙ্গিক খরচ বহন করবে। আপনাকে শুধু বিমান ভাড়া দিতে হবে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন এখানে আপনি খুবই কম খরচে সরকারিভাবে জাপান যেতে পারবেন।
জাপান ভিসা আবেদন
জাপান ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে আপনি দুটি পন্থা অবলম্বন করতে পারেন। একটি হল আপনি সরকারিভাবে জাপান যেতে পারেন। আরেকটি হলো আপনি দালালের মাধ্যমে ভিসা আবেদন করে নিয়ে জাপান যেতে পারবেন। যদি আপনি সরকারি ভাবে জাপান যেতে চান তাহলে প্রবাসে কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে আপনার ভিসার আবেদন করে দেয়া হবে যদি আপনি ট্রেনিং এ পাস করেন।
আর যদি আপনি দালালের মাধ্যমে ভিসা আবেদন করতে চান তাহলে তারা আপনার সকল প্রসেসিং করে দেবেন। জাপান ভিসা আবেদনের ক্ষেত্রে আপনি নিজে থেকে ভিসা আবেদন করতে পারবেন না। তবে যদি আপনি পড়াশোনা করার জন্য জাপান যেতে চান তাহলে আপনি নিজে থেকেই ভিসা আবেদন করতে পারবেন। তবে অন্যান্য ক্ষেত্রে আপনি নিজে থেকে বেশি আবেদন করতে পারবেন না।
জাপানে কোন কাজের বেতন বেশি
জাপানে যে সকল কাজ রয়েছে তার মধ্যে নার্সিং ও মেকানিক্যাল কাজে বেতন বেশি দিয়ে থাকে। এছাড়াও কৃষিকাজের বেতন তারা অনেক বেশি দিয়ে থাকে। তাই আপনি যদি বেতন বেশি পেতে চান তাহলে নার্সিং ও কৃষিকাজ এর ভিসা নিয়ে জাপান যেতে পারেন। যদি আপনি নার্সিং ভিসা নিয়ে জাপান যেতে পারেন তাহলে আপনি মাসে অনায়াসে ৫ লক্ষ্ টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
জাপানের সর্বনিম্ন কাজের বেতন ২ লক্ষ টাকা বাংলাদেশে টাকা হিসেবে। সুতরাং বুঝতে পারছেন এখানে বেতনের পরিমাণ অনেক বেশি দিয়ে থাকে। কৃষি কাজের ভিসা নিয়ে আপনি জাপান গেলে অনায়াসে ৩ লক্ষ্ থেকে ৪ লক্ষ টাকা উপার্জন করতে পারবেন। তবে যদি আপনার কাজের দক্ষতা ভালো থাকে তাহলে আপনার বেতন আরো বেশি হবে।
জাপানে সর্বনিম্ন বেতন কত
জাপানে সর্বনিম্ন বেতন বাংলাদেশি টাকা হিসেবে ২ লক্ষ টাকা। তবে যদি আপনার কাজের দক্ষতা ভালো থাকে তাহলে জাপান থেকে আপনি অনায়াসে ১০ লক্ষ টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
জাপানে বেতন
অন্যান্য দেশের তুলনায় জাপানে কাজের বেতন অনেক ভালো। জাপানে কাজের বেতন প্রতি ঘন্টায় সর্বনিম্ন ৯০০ টাকা ধরা হয় বাংলাদেশী টাকা হিসেবে। আর জাপানে প্রতিদিন ৮ ঘন্টা করে কাজের সময়। সেই হিসেব করলে দেখা যায় আপনি জাপানে প্রতি মাসে অন্তত ২ লক্ষ টাকা অনায়াসে উপার্জন করতে পারবেন।
Read More